পরকীয়ার জেরে আগুন, অবশেষে মারা গেলেন দগ্ধ গৃহবধূ
প্রকাশিত : ১৬:৩৩, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
নওগাঁয় পরকীয়ার জের ধরে যৌতুকের দাবিতে স্বামীর দেওয়া আগুনে দগ্ধ গৃহবধূ ফজিলাতুন নেছা অবশেষে হার মানলেন মৃত্যুর কাছে হার। টানা ৮ দিন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে লড়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এরআগে গত ২৭ আগস্ট সকালে সদর উপজেলার ভবানীপুর মধ্যেপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
ফজিলাতুন নেছা সদর উপজেলার কোমইগাড়ী সাকিদার পাড়ার ফজলুর হোসেনের মেয়ে এবং একই উপজেলার ভবানীপুর মধ্যেপাড়া গ্রামের আতোয়ার রহমানের ছেলে গোলাম রাব্বানীর স্ত্রী। ফজিলাতুন নেছার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার বাবা ফজলুর হোসেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়- পারিবারিকভাবে চার বছর আগে সদর উপজেলার ভবানীপুর মধ্যেপাড়া গ্রামের আতোয়ার রহমানের ছেলে গোলাম রাব্বানীর সাথে বিয়ে হয় ফজিলাতুন নেছার।
কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পরই পরকিয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন গোলাম রাব্বানী। বিষয়টি তার স্ত্রী জানতে পেরে নিষেধ করলে পরকিয়া করবেন না বলে যৌতুক বাবদ সাড়ে ৩ লাখ টাকা দাবি করেন।
এরপর থেকেই স্ত্রী ফজিলাতুন নেছাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিলেন তার স্বামী ও পরিবারের সদস্যরা।
এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার ২৭ আগস্ট সকালে আবারো তাকে যৌতুকের টাকা নিয়ে আসার জন্য বলা হয়। এসময় টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে লাঠি দিয়ে শরীরে বিভিন্ন জায়গায় এলোপাতাড়ি মারপিট শুরু করেন স্বামী গোলাম রাব্বানী।
একপর্যায়ে সে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তার পরিবারের সদস্যরা মিলে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
পরে তার আত্মচিৎকারে স্থানীয়রা এসে তাকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে প্রথমে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর ৮ দিন পর আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।
এদিকে এ ঘটনায় গৃহবধূর বাবা ফজলুর হোসেন বাদী হয়ে গোলাম রাব্বানীসহ তার পরিবারের ৪ সদস্যের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করলে স্বামী গোলাম রাব্বানীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক বলেন, ওই গৃহবধূ মারা যাওয়ার বিষয়টি আমরা শুনেছি। এ ঘটনায় থানায় পূর্বেই একটি মামলা হওয়ার পর তার স্বামীকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এসবি/
আরও পড়ুন